রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন

আদালতে মাদক মামলার বিচারের জন্য খসড়া আইন অনুমোদন

Reporter Name
  • আপডেট করা হয়েছে মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ৬৩৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার :

স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে এখতিয়ারভুক্ত আদালতে মাদক সংক্রান্ত মামলার বিচার অনুষ্ঠানের বিধান রেখে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন-২০২০’র খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার সকালে তাঁর কার্যালয়ে (পিএমও) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন প্রদান করা হয়। ‘মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলা জট কমানোর জন্য এখতিয়ারভুক্ত আদালতে মাদক সংক্রান্ত মামলার বিচারের বিধান রেখে মন্ত্রিসভা ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন-২০২০’র খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে’ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘অনেক মামলার যে জট সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো নিষ্পন্নের জন্য এই ব্যবস্থা।’ সচিব বলেন,মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ কার্যকর হওয়ার পর এই আইনে দায়েরকৃত মামলা সমূহ বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তিতে জটিলতার সৃষ্টি হয় এবং পেন্ডিং মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায়,এই আইনের আওতায় দ্রুত বিচার কাজ শুরুর জন্য আইনের ৪৪ ধারায় ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত গঠনের মাধ্যমে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, কিছু প্রশাসনিক কারণে বিচর ও আইন বিভাগ থেকে অদ্যাবধি মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন অথবা অতিরিক্ত জেলা বা দায়রা জজতে তাঁর দায়িত্বের অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব প্রদান করা সম্ভব হয়নি। এ সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনাল এখনও গঠিত না হওয়ায় প্রায় ১লাখ ৭৫ হাজারের অধিক মামলা জট আকারে রয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, মূলত,আদালত গঠনের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত আইনের ৪৪ ধারায় সংশোধনের পাশাপাশি মোট ২২টি ধারায় পরিবর্তন ও প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হয়েছে। এই আইনের অধীন মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত কতৃর্ক বিচার্য হবে। সচিব আরো বলেন, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ,মহানগর দায়রা জজ উহার এখতিয়ারাধীন এলাকার জন্য,কেবল মাদকদ্রব্য অপরাধ বিচারের নিমিত্ত এক বা একাধিক এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত নির্দিষ্ট করবেন। ‘দুই বছরের সাজা হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচার করবেন। যেখানে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট আছে সেখানে দায়রা জজ বিচার করবেন,’যোগ করেন তিনি। সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় ‘বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন আইন, ২০২০’এর খসড়াও নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। তিনি বলেন, খসড়া আইনে ৭টি অধ্যায়, ২৭টি ধারা এবং ৭৪টি উপধারা রয়েছে। মুজিবুর রহমান বলেন, খসড়া আইনে কর্পোরেশনের তহবিল, বিনিয়োগ ও হিসাব রক্ষণ সংক্রান্ত সুস্পষ্ট বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে কর্পোরেশনের সার্বিক আর্থিক ও নিরীক্ষা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আসবে এবং আইনটি বিভিন্ন অধ্যায় ও উপ-শিরোনামে বিভক্ত করায় প্রায়োগিক সুবিধা হবে।

এছাড়াও, আইনটি কার্যকর হলে পর্যটন কর্পোরেশনের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করা সহ পর্যটন শিল্প বিকাশ সহজতর হবে এবং পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বেকারত্ব হ্রাস ও আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মুজিবুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে ইনফরমালি যতটুকু কথা হয়েছে তাতে আপাতত চীনে আমাদের নাগরিক যারা আছেন, তাদের আনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে একটা দাবি উঠেছে। পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে যে, তারা যে যুক্তিগুলো দিয়েছেন যেমন- খাবারের অভাব, সাপোর্ট পাচ্ছেন না, আসলে তাদের খাবার-দাবারের কোনো অভাব নেই। বরং তাদের সব সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। তাই এ মুহূর্তে তাদের আনার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় একটি অভিনন্দন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানান । তিনি বলেন, এই জয় মুজিববর্ষে বাংলাদেশের জন্য সেরা উপহার। সকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বৈঠকের শুরুতেই বাংলাদেশ দলের পক্ষে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গত চার বছর কঠোর পরিশ্রম করেছে। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ পারফরমেন্সের মাধ্যমে তারা পরিশ্রমের সুফল পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দল চার বারের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দলকে হারিয়েছে। তাদের (বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের) অনেক সাহস আছে এবং তারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।’ মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশ দলের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ বিজয়ের উৎসব পালনের জন্য একদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব দিলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অর্জনের জন্য সকলকে আরো বেশি কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমার প্রস্তাব হচ্ছে এই খুশিতে সবাইকে একদিন বা একঘন্টা বেশি কাজ করতে হবে।’ এই ইস্যুতে একজন মন্ত্রী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের ঘটনাকে বাংলাদেশের খেলাধূলার ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড় অর্জন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের খেলাধূলার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।’ মন্ত্রী আরো বলেন, দলনায়ক আকবর আলি টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে তার পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখানে কিভাবে সংকটপূর্ণ সময়ে মোকাবেলা করতে হয়ে তা তার থেকে শেখার আছে। আমাদের সবাইকেই সংকটের সময়ে তা থেকে উত্তরণের জন্য এভাবেই চেষ্টা চালাতে হবে।’ তিনি আকবরের এই ম্যাচ উইনিং ইনিংসটিকে কুয়ালালামপুরের ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফিতে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে আকরাম খানের সেই স্মরণীয় ব্যাটিংয়ের সাথে তুলনা করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
themesba-lates1749691102