কক্সবাজার শহরে চলছে সড়ক উন্নয়নের কাজ। কাজের অংশ হিসেবে প্রধান সড়ক সহ উপ-সড়কগুলোতে বড় বড় গর্ত, পাইপ চালানো সহ স্থাপনার কাজ চলছে। এরই মধ্যে গতকাল সোমবার ভোরে সামান্য বৃষ্টিতে কাদা-নালার আর্বজনা আর ময়লা পানিতে একাকার হয়ে গেছে শহরের প্রধান সড়ক ও উপ সড়কসমূহ। এতে এমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ পথচারীরা পায়ে হেঁটে চলাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। যান চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। নালার নোংরা পানির গন্ধে ভোগান্তি আরও চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এ ব্যাপারে সচেতন মহল বলছেন, এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী। আর বর্ষার আগে কাজ শেষ না হলে শহরবাসীর জন্য অপেক্ষা করছে স্মরণকালের ভোগান্তি।
এদিকে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলছেন, পর্যটন নগরীর উন্নয়ন কাজের জন্য সাময়িক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া এই বছর কাজ শেষ হবেনা।
শহরের প্রধান সড়কের ভোলাবাবুর পেট্রোল পাম্প, বাজার ঘাটা, বার্মিজ মার্কেট, কালুর দোকানসহ বেশ কিছু উপসড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গতকাল ভোরের বৃষ্টির কারণে সড়ক সংষ্কারের কাজে তৈরী করা গর্তগুলো পানিতে ভরে গেছে। ভরাট হয়ে থাকা নালা-নর্দমার আর্বজনা ও নোংরা পানি রাস্তায় উঠে যাওয়ায় চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে জনজীবনে নেমেছে চরম ভোগান্তি।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শহরের রুমালিয়ারছরা এলাকার প্রধান সড়ক খুঁড়ে খানা-খন্দক করে রাখা হয়েছে প্রায় ৩ মাস। বাজারঘাটা থেকে কৃষি অফিস সড়কের দক্ষিণ মাথা পর্যন্ত সড়কেরও একই অবস্থা। সপ্তাহ-দু’য়েক হচ্ছে, এন্ডারসন রোড খুঁড়ে ফেলা হয়েছে।
ক্ষত-বিক্ষত সড়কে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। প্রধান সড়কের উন্নয়ন কাজ করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আর কস্তুরাঘাট থেকে মাঝেরঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কটির কাজ শুরু করেছে পৌরসভা। এই অল্প বৃষ্টিতে কাদা আর ময়লা পানিতে একাকার হওয়ার পাশাপাশি গর্ত সমুহ পানির ডোবাতে রূপ নিয়ে ভোগান্তির সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাবে শহরবাসী পড়তে যাচ্ছে চরম দুর্ভোগে।
তৌহিদুল ইসলাম তোহা নামের এক সচেতন ব্যক্তি জানান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পৌরসভা সহ অন্যান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে আরো আগে কাজ শুরু করে বর্ষার আগে কাজ শেষ করতে পারতেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এটি তাদের অবহেলা এবং ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই নয়।
মিনহাজ চৌধুরী নামে আরেক যুবক জানান, এই সমস্ত কর্মকান্ড শুধু মাত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা, সমন্বয়হীনতা এবং পরিকল্পনাহীন কর্মকান্ডের ফসল আমরা ভোগ করছি। এই দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।
সাখাওয়াত হোসেন তুর্য নামে এক যুবক জানান, অন্ততপক্ষে বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা বা গর্তগুলো ভরাট করে হলেও এই ভোগান্তি থেকে শহরবাসীকে মুক্তি দেওয়া হউক।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) এর চেয়ারম্যান লেঃ কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ জানান, উন্নয়নের কাজ করতে গিয়ে শহরবাসী সাময়িক ভোগান্তিতে পড়েছেন। যার জন্য তিনি দুঃখিত। তাই অন্তত ঈদের আগে দুর্ভোগ লাঘবে গর্তগুলো ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। তবে এই বর্ষার আগে কাজ শেষ হবেনা। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর জুনের শেষে কাজ শেষ হবে।
এই দুর্ভোগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন সচেতন মহল। বর্ষার আগে ভরাট হয়ে যাওয়া নালা-নর্দমার নোংরা পানি অপসারণ সহ যৌথ সমন্বয়, পরিকল্পনা এবং আন্তরিকতার মাধ্যেমে ঠিকঠাক মত কাজ না করলে বর্ষা মৌসুমে স্মরণকালের দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে শহরবাসীর জন্য এ অভিমত সচেতন মহলের।
কমেন্ট করুন