কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম সাম্প্রতিক সংগঠিত ঘটনা ও দলীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে এসব ঘটনা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখারও অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আসন্ন চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে তিনি কাজ করবেন।
রবিবার (১৩ জুন) দলীয় সভানেত্রীর ঢাকার ৩ নম্বর ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ ৩ ঘণ্টার বৈঠকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ও কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমের মধ্যে চলমান বিরোধের সমঝোতা হয়। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় এ সমঝোতা হয়েছে বলে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি বিরূপপূর্ণ মন্তব্য করায় সংসদ সদস্য জাফর আলম দুঃখ প্রকাশ করেন। অপরদিকে, দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এখতিয়ার না থাকায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এবং চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য জাহেদুল ইসলাম লিটুকে স্বপদে বহাল করা হয়েছে।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১৭ জুন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ একটি সভা আহবান করবে। সেখানে সভাপতিত্ব করবেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এমপি। সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা। বিশেষ অতিথি থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
রবিবার অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, অর্থ সম্পাদক ও মরহুম আতাউর রহমান খান কায়সারের কন্যা ওয়াসিকা খান, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম, কক্সবাজার সদর আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা ও চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুন দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরী সভায় এমপি জাফর আলমকে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি এবং তার কয়েকদিন আগে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের পর পর একই দিন রাতেই ৩ ঘণ্টা চকরিয়ার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
গত ৮ জুন চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও চকরিয়া পৌরসভার নৌকার মনোনীত মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী উপর হামলা ও দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গের অভিযোগ এনে জেলা আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এ নিয়ে, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ও কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমের মধ্যে তীব্র বিরোধ দেখা দেয়। উত্তপ্ত হয় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিও।
কমেন্ট করুন