বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড়

সৈকত
  • আপডেট করা হয়েছে মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১
  • ৪৬৭ বার পড়া হয়েছে

খুরুশকুল দৃষ্টিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভিড় জমাচ্ছে বিনোদনপ্রেমীরা। করোনাকালে কক্সবাজার জেলার সবকটি পর্যটনস্পট বন্ধ থাকায় খুরুশকুল প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পটি এখন বিনোদনপ্রেমীদের কাছে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। খুরুশকুল ইউয়িনের চতুর্দিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় কক্সবাজার সদরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছে এখানে। বিকাল হওয়ার সাথে সাথে সূর্য্য ডুবার প্রাক্কালে বিনোদন প্রেমীদের এক নৈসর্গিক স্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে খুরুশক‚ল দৃষ্টিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পটি। মহেশখালীর চ্যানেল নিয়ে গড়ে উঠায় এই বিনোদন কেন্দ্রটি সহজে পর্যটনপ্রেমীদের মন কাড়ে। কোলাহল মুক্ত হওয়ায় পড়ন্ত বিকেলকে উপলদ্ধি করতে একপলক দেখার জন্য প্রতিদিন ছুটে আসছেন বিনোদনপ্রেমীরা।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেশ কয়েকটি বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে খুরুশকুলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আশ্রয়ন প্রকল্প একটি বড় উদ্যোগ। শহরের কুতুবদিয়া পাড়ায় আশ্রয় নেয়া ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের আশ্রয়ণের জন্য এই প্রকল্পটির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পে ৪৪০৯টি পরিবার আশ্রয়ণের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরমধ্যে কিছু কিছু সুবিধাভোগীদের ফ্ল্যাটও হস্তান্তর করা হয়েছে। মূলতঃ প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত সুবিধাভোগীদের চাবি হস্তান্তরের পর থেকে এই প্রকল্পটি এখন বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে।

চৌফলদন্ডী থেকে ঘুরতে আসা রিয়াজুল ইসলাম দম্পতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পটি শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্থদের আশ্রয় দেয়নি পাশাপাশি দিয়েছে বিনোদনও। পুরো প্রকল্প জুড়ে নদীর পাশ্ববর্তী হওয়ায় দৃষ্টিনন্দন হিসেবে গড়ে উঠে এটি। অনেকদিন ধরে অনেকে বলাবলি করছিল এটি নাকি অন্ততঃ সুন্দর হয়েছে। তাই পরিবার নিয়ে এক পলক দেখতে আসলাম।

স্থানীয় দিদারুল আলম নামের এক ব্যক্তি বলেন, প্রকল্পটি করার আগে এখানে তেমন কিছু ছিল না। তাই এখানে তেমনভাবে কেউ বেড়াতেও আসতো না। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি করার পর থেকে নদীর পাশ্ববর্তী তীরগুলোও দৃষ্টিনন্দন করে তুলে। এজন্য মূলতঃ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এখানে। প্রতিদিনই এখানে পাশ্ববর্তী চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, পিএমখালী, তোতকখালী, তেতৈয়া, ঈদগাঁও, খুরুশকুলের স্থানীয় পর্যটক সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা ঘুরতে আসছে।

সিএনজি চালক সুমন নামের এক ব্যক্তি বলেন, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প এখন একটি মডেল। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পকে ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে বিশাল পর্যটন স্পট। যেটি খুরুশকুল থেকে চৌফলদন্ডী ব্রিজ পর্যন্ত বিস্তৃত। আগে এখানে তেমন কেউ ঘুরতে আসতে না। এখন প্রকল্পটি ঘিরে অনেকে বেড়াতে আসছে। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ হওয়ায় দৈনিক বাড়ছে পর্যটকদের সংখ্যা। বিনোদনপ্রেমীদের কাছে এটি ‘প্রকল্প’ নামে পরিচিত। এটি যেমন বিনোদনপ্রেমীদের মনের খোরাক মিঠাচ্ছে তেমনি স্থানীয় সিএনজি, রিক্সা, টমটম, বিভিন্ন যানবাহন সহ স্থানীয় অনেকে রোজি-রোজগারে বিশেষ অবদান রাখছে।

পিএমখালীর শাহাদত তাহের নামের এক ব্যক্তি বলেন, বিনোদনকেন্দ্র নামক ‘প্রকল্প’টি মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এখানে। তাই পরিবার নিয়ে প্রায়ই সময় বেড়াতে আসি। করোনাকালে বাইরের কোথাও যেতে না পারায় এটিই আমাদের বিনোদের খোরাক মিঠাচ্ছে। প্রকল্পটিকে ঘিরে এখানে দৃষ্টিনন্দন স্পট তৈরি করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি এটি দৃষ্টিনন্দন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এখানে থাকছে ৫ তলা বিশিষ্ট ১৩৯টি ভবন এবং ১০ তলা বিশিষ্ট একটি সুউচ্চ ভবন।১০তলা বিশিষ্ট ভবনটির নাম হবে শেখ হাসিনা টাওয়ার। খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পটিকে মূল শহরের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ব্রিজ নির্মাণ ও সংযোগ সড়ক স্থাপনের। কস্তুরী ঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর উপর নির্মাণ করা হচ্ছে ৫৯৫.০০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পটির সুরক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নৌবাহিনীর মাধ্যমে করা হয়েছে মাটি ভরাটের কাজ এবং বেঁড়িবাধ নির্মাণ। এখানে থাকবে কমিউনিটি ক্লিনিক, বিনোদনের জন্য পার্ক, স্কুল কলেজ, আধুনিক শুটকি পল্লী। এই প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প হবে কক্সবাজার জেলার আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
themesba-lates1749691102