বাংলাদেশের পরবর্তী সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, যিনি এতদিন সেনাসদরের কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে আগামী ২৪ জুন থেকে তিন বছরের জন্য তাকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার তার এই নিয়োগের আদেশ জারি করেছে।
শফিউদ্দিন আহমেদ সেনাপ্রধানের দায়িত্বে জেনারেল আজিজ আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ২০১৮ সালের ২৫ জুন থেকে ওই দায়িত্ব সামলে আসছেন আজিজ আহমেদ।
খুলনার একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ১৯৮৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর নবম বিএমএ লংকোর্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদাতিক কোরে কমিশন পান।
গতবছর ডিসেম্বরে তাকে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের (অ্যার্টডক) জিওসির দায়িত্ব থেকে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) করে সেনাসদরে নিয়ে আসা হয়েছিল।
তার আগে ২০১৯ সালের অগাস্টে মেজর জেনারেল থেকে পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হন শফিউদ্দিন আহমেদ। তখনই তাকে অ্যার্টডকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি পদাতিক ব্রিগেড এবং একটি পদাতিক ডিভিশনসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে নেতৃত্বের ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১২ সালের মে মাসে পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হওয়ার পর সরকার তাকে ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির দায়িত্ব দেয়। পরে তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) মহাপরিচালক হন।
এসডিএস (আর্মি-১) এর এনডিসি এবং লজিস্টিকস এরিয়ার জিওসি ও এরিয়া কমান্ডারের দায়িত্বও পালন করেছেন শফিউদ্দিন আহমেদ।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে মোজাম্বিকে ১৬ মাস শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন এই সেনা কর্মকর্তা। পরে ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে শান্তিরক্ষী মিশনে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন শফিউদ্দিন।
তিনিই প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, যিনি শন্তি মিশনে মাল্টিন্যাশনাল ফোর্স কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পান।
১৯৬৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর খুলনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন শফিউদ্দিন আহমেদ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিফেন্স স্টাডিজে স্নাতকোত্তর করার পর এমআইএসটিতে তিনি এমবিএ এবং ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজ স্টাডিজে এমফিল করেন। বর্তমানে তিনি বিইউপিতে পিএইচডি করছেন।
বিশ্বের দুই ডজনের বেশি দেশ ভ্রমণ করা এই সেনা কর্মকর্তা ব্যক্তিগত জীবনে দুই কন্যা সন্তানের পিতা।
কমেন্ট করুন