রাজধানীর কল্যাণপুরের উত্তর বিশিল বালুর মাঠ বস্তিতে থাকেন মমতাজ বেওয়া (৬৮)। চার বছর ধরে তিনি বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। তবে তাঁর এ ভাতা বন্ধ আছে গত ছয় মাস। একই রকম সমস্যায় পড়েছেন কল্যাণপুরের ১৬১/১১ দক্ষিণ পাইকপাড়ার বাসিন্দা আম্বিয়া খাতুন (৬৩)।
ওই এলাকার ৪৩০/২ বাড়ির বাসিন্দা পোশাককর্মী দম্পতির একমাত্র সন্তান রাব্বি ইসলাম (১৫) প্রতিবন্ধী ভাতা পায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে। তার ভাতাও বন্ধ রয়েছে বলে প্রথম আলোকে জানালেন মা ফাতেমা বেগম।
ভাতা কেন পাচ্ছেন না, খোঁজ নিতে ব্যাংকে গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে যে ব্যাখ্যা পেয়েছেন, সেটা ততটা বুঝতে পারেননি। শুধু বুঝেছেন, ‘টাকা মাইর যাবে না।’
কেন তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন না, জানতে সমাজসেবা অধিদপ্তরে খোঁজ নিলে জানা যায়, ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ার কারণে ছয় মাস ধরে আটকে আছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের ভাতা। ইতিমধ্যে ভাতাভোগীদের অর্ধেকসংখ্যকের ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি শাখা) ফরিদ আহমেদ মোল্লা প্রথম আলোকে বলেছেন, ৪৯৫টি ইউনিটে জিটুপি (গভর্নমেন্ট টু পারসন) পদ্ধতিতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৮০-৯০ শতাংশের মতো ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট তৈরি হলেই ঈদুল ফিতরের আগে বকেয়া ভাতা একসঙ্গে দেওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ৭টি নতুনসহ ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১২৩টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চলছে। এতে বাজেট রয়েছে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা।
জানা গেছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরের বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচির অধীনে মোট ৮৮ লাখ ৫০ হাজার সুবিধাভোগীকে নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে এক লাখের মতো প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি রয়েছে। ইলেকট্রনিক উপায়ে জিটুপি পদ্ধতিতে ভাতা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) সফটওয়্যার ব্যবহার করে উপকারভোগীদের ডেটাবেইস তৈরি করা হচ্ছে। মোবাইল ফোনে অর্থ লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে দেশজুড়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে। অ্যাকাউন্টধারীদের সব তথ্য এমআইএসে ডেটাবেইস আকারে থাকবে।
কেন তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন না, জানতে সমাজসেবা অধিদপ্তরে খোঁজ নিলে জানা যায়, ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ার কারণে ছয় মাস ধরে আটকে আছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের ভাতা। ইতিমধ্যে ভাতাভোগীদের অর্ধেকসংখ্যকের ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
কমেন্ট করুন