দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন মাস আন্দামান সাগরে ভাসার পর ৮১ রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ফিশিং বোট ইন্দোনেশিয়া উপকূলে ভিড়েছে। এদের বেশিরভাগ মহিলা ও শিশু। তারা গত ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার উপকূল ছেড়েছিল।
মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, ১১ ই ফেব্রুয়ারি অন্তত ১০০ জন রোহিঙ্গা বোঝাই একটি বোট মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্য রওয়ানা দিয়েছিল। ফেব্রুয়ারীর শেষের দিকে রোহিঙ্গা বহনকারী বোটটি ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দেয়ায় ভারতীয় উপকূল ভিড়ে। ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী জানিয়েছিল, বোটের রোহিঙ্গাদের মধ্যে আটজন মারা গেছে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বেঁচে থাকা লোকদের খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করলেও তাদের নামতে দেয়নি। সেসময় ভারত বলেছিল এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে বের হয়েছিল, তাই তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে যায়নি দাবী করে বাংলাদেশ তাদের গ্রহণ করেনি।
রোহিঙ্গা নজরদারি দল আরাকান প্রকল্পের পরিচালক ক্রিস লেওয়া বলেছেন, বোটে থাকা ৮১ জন লোকের অবস্থা মোটামুটি ভাল ছিল এবং তারা বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে পৌঁছে। এসব অভিবাসী রোহিঙ্গারা সম্পূর্ণ নিরাপদ নন এবং আমরা আশা করি তাদের নির্বাসন দেওয়া হবে না।
গত তিন মাস ধরে সমুদ্রে ঝুঁকিত ভাসমান রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং মালয়েশিয়াকে বারবার আহবান করছিল।
বিষয়টি নিয়ে ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য করা হয়নি।খবর রয়টার্সের।
রোহিঙ্গারা বার্মায় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী। বার্মিজ পক্ষ তাদের বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী হিসাবে দেখে এবং তাদের নাগরিক হওয়ার অনুমতি দেয় না।২০১৭ সালে বার্মায় সীমান্ত চৌকিতে কথিত হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর সামরিক ক্র্যাকডাউন চালানো হয়েছে। ঐ সময় এক মিলিয়নেও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারীরা প্রায়শঃ রোহিঙ্গাদের লক্ষ্যবস্তু করে। তারা রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে অনিরাপদ নৌকাগুলিতে তাদের অভিবাসনে প্রলুব্ধ করে।
কমেন্ট করুন