মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন

অসচেতনতায় জেলায় বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

সৈকত
  • আপডেট করা হয়েছে মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১
  • ৩৭২ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারে গত কয়েকদিনে কোভিট-১৯ সংক্রমণ যে হারে বেড়েছে তাতে উদ্বিগ্ন জেলার সচেতন মহল। সম্প্রতি এই রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি অনেকটা মানুষের কারণে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা না থাকায় এবং ন্যুনতম স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এই রোগ সংক্রমণের বৃদ্ধির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন অভিজ্ঞ চিকিৎসাবিদরা।

এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানান পদক্ষেপ নিলেও ছদ্মবেশে চলাফেরার অভিযোগ রয়েছে অসচেতন সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে কক্সবাজারে কোভিট-১৯ শনাক্ত হয়েছেন ১০৮ জন। অর্থাৎ ৭৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ১০৮ জন। যা গতদিনের তুলনায় ৪ গুণ বেশি। এর আগে অর্থাৎ গত ১৭ এপ্রিল ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে কোভিট-১৯ শনাক্ত হয়েছে ২৯ জন। ওইদিন ২৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় করোনা পরীক্ষা ও সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ। আগের যেকোন দিনের তুলনায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলায় এই পর্যন্ত কোভিট-১৯ এর কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৯ জন। একটু পেছন দিকে তাকালে দেখা যাবে এই রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কী পরিমাণ বেড়েছে! গত ২৬ মার্চ ৪৩১ জন পরীক্ষিত স্যাম্পলে সংক্রমিত হয় ৩৫ জন, ২৭ মার্চ ৫১০ জনে সংক্রমিত ১১ জন, ২৮ মার্চ ৪৫৫ জনে সংক্রমিত ৩৪ জন, ২৯ মার্চ ৪৭০ জনে সংক্রমিত ৩৯ জন, ৩০ মার্চ ৩৯৩ জনে সংক্রমিত ৩৮ জন, ৩১ মার্চ ৪০১ জনে সংক্রমিত ৪২ জন, ১ এপ্রিল ৪৯০ জনে সংক্রমিত ৪৮ জন, ২ এপ্রিল ৩৮৯ জনে সংক্রমিত ১৮ জন, ৩ এপ্রিল ৪১০ জনে সংক্রমিত ৪৮ জন, ৪ এপ্রিল ৪৮৯ জনে সংক্রমিত ৫২ জন, ৫ এপ্রিল ৬৪৯ জনে সংক্রমিত ৮১ জন, ৬ এপ্রিল ৪৪৪ জনে সংক্রমিত ৭২ জন, ৭ এপ্রিল ৬৩২ জনে সংক্রমিত ৫৭ জন, ৮ এপ্রিল ৫২২ জনে সংক্রমিত ৯৪ জন, ৯ এপ্রিল ৪৫৭ জনে সংক্রমিত ৪৫ জন, ১০ এপ্রিল ৪৫০ জনে সংক্রমিত ৬০ জন, ১১ এপ্রিল ৪৬০ জনেসংক্রমিত ৬১ জন, ১২ এপ্রিল ৬৩৮ জনে সংক্রমিত ৬১ জন, ১৩ এপ্রিল ৪৫৫ জনে সংক্রমিত ৬৪ জন, ১৪ এপ্রিল ৫১৬ জনে সংক্রমিত ৪৬ জন, ১৫ এপ্রিল ৪০৮ জনে সংক্রমিত ৬২ জন, ১৬ এপ্রিল ২৩৪ জনে সংক্রমিত ২৯ জন, ১৭ এপ্রিল ২৮০ জনে সংক্রমিত ২৩ জন, ১৮ এপ্রিল ৭২৯ জনে সংক্রমিত ৯১ জন।

এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বার বার তুলে ধরা হচ্ছে সংক্রমণের চিত্র। জেলাবাসীকে সচেতন করতে এবং সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে।

গত ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত গণনায় দেখা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার ৪৬ জন, রামুতে ৪ জন, উখিয়ায় ১২ জন, টেকনাফে ৯ জন, চকরিয়ায় ৯ জন, মহেশখালীতে ২ জন, কুতুবদিয়া ২ জন, পেকুয়ায় ২ জন মৃত্যুবরণ করেন কোভিড-১৯ এর কারণে।

এছাড়াও জেলার অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর বেপরোয়া মনোভাব ও করোনাকে হালকাভাবে দেখে বেপরোয়া মানসিকতার কারণে সংক্রমিত হচ্ছে জেলার সাধারণ জনগোষ্ঠী। হীনমন্য মনোভাব থেকে ফিরে আসতে না পারলে কক্সবাজারে এই রোগের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং ভয়াবহ রূপ নেবে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ কার্যকর করতে গতকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানা ও শহর এলাকায় পুলিশের চেকপোষ্ট এবং তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। জরুরি পরিসেবায় নিয়োজিত যানবাহন এবং অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত বাইরে যারা বের হচ্ছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অহেতুক বাহির হওয়া যানবাহনের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা। তাই ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি বিধিনিষেধ নিশ্চিতকল্পে জেলা প্রশাসনের অভিযান চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
themesba-lates1749691102