শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন

কক্সবাজারে বোরোর বাম্পার ফলন

সৈকত
  • আপডেট করা হয়েছে বুধবার, ৫ মে, ২০২১
  • ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারে এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সরকার সার ও বীজে বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। গতকাল (২মে) পর্যন্ত ৩৮ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে এবং অবশিষ্ট ধান ১ মাসের মধ্যে ঘরে তুলবে কৃষকরা এমনটাই জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মোঃ এখলাস উদ্দিন।

আগামিতে যেহেতু কালবৈশাখীর আশংকা রয়েছে সেহেতু কৃষকরা যেন পাকা ধান দ্রুত কর্তন করে ঘরে তুলে এমন পরামর্শ প্রদান করেন এ কর্মকর্তা। রাবার ড্যামের অচলাবস্থার কারণে সদরে সামান্য উৎপাদন কম হলেও সেটি মোট উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বেনা বলেও তিনি দৈনিক কক্সবাজারকে নিশ্চিত করেন।

এদিকে বোরোর বাম্পার ফলনের কারণে কৃষকরা মহাখুশি। এ কর্মকর্তার দাবি কক্সবাজারে বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে খাদ্যে উদ্বৃত্ত থাকবে। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলে ভিন্ন কথা। যদি শতভাগ পাকা ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারে তাহলে জেলার ২৪ লাখ মানুষের যোগান দিয়ে চাল উদ্বৃত্ত থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নিবিড় বার্ষিক সফল উৎপাদন কর্মসূচীর আওতায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বোরো ধানের উপজেলা ভিত্তিক জমি আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এবং অগ্রগতি নির্ধারণ করা হয়। জেলায় চলতি বোরো মওসুমে ৫২ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আবাদের বিপরীতে সম্ভ্যাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ১৪ হাজার ৫৬ মেট্রিক টন চাল। যেহেতু ৩৮ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে সেকারণে লক্ষ্যমাত্রা নিরুপন কয়েকদিনের মধ্যে জানা যাবে। তবে যেভাবে মাঠে ফসল উৎপাদন হয়েছে সে কারণে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন উপ পরিচালক ড. মোঃ এখলাসুর রহমান। এ জন্য শতভাগ ধান কর্তন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

উপজেলা ভিত্তিক আবাদ ও উৎপাদনের অগ্রগতি যথাক্রমে চকরিয়ায় ১৮ হাজার ৮০০ হেক্টরে ৭৭ হাজার ৬শ ২৩ মেঃ টন, পেকুয়ায় ৭ হাজার ৩শ হেক্টরে ২৯ হাজার ৩শ ৭৫ মেঃ টন, রামুতে ৬ হাজার ৬০০ হেক্টরে ২৫ হাজার ৭শ ৯৪ মেঃ টন, সদরে ৭ হাজার ৩শ হেক্টরে ২৮ হাজার ৭শ ৭ মেঃ টন, উখিয়ায় ৬ হাজার ৪৫০ হেক্টরে ২৫ হাজার ৩শ ৫৮মেঃ টন, টেকনাফে ১ হাজার ২শ ৭৭ হেক্টরে ৪ হাজার ৭শ ৬৭ মেঃ টন, মহেশখালীতে ৭ হাজার ১ শ হেক্টরে ২৮ হাজার ৭শ ২৬ মেঃ টন এবং কুতুবদিয়ায় ২ হাজার ৬শ ৪৫ হেক্টরে ১০ হাজার ৩শ ৮৭ মেঃ টন।

জেলায় বোরো মওসুমে ৩ জাতের ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এদের মধ্যে ৮৮৮৫ হেক্টরে হাইব্রীড জাতের ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪১,৭৫৯ মেট্রিক টন, উফশী জাতের ৪৬ হাজার ৬শ ৪৯ হেক্টরে ১ লাখ ৮২ হাজার ৮শ ৬৪ মেঃ টন এবং স্থানীয় জাতের ৭৫৩ হেক্টরে ১ হাজার ৪শ ৬০ মেঃ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

এদিকে সদরের পিএমখালীতে দায়িত্বরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা জানান, রাবারড্যাম অকেজো থাকায় আমার দায়িত্বরত এলাকায় চাষাবাদে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তবে যেটুকু চাষাবাদ হয়েছে সেখানে উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষকরা নির্দেশনা মেনে চাষ করায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিশেষ করে কয়েকটি জাত বিনা ৮, ১০, ব্রি- ৭৪, ৬২, ৩৩, ৫৮ জাত খুবই ভাল ফলন হয়েছে। স্থানীয় লাল ধান, হাইব্রিডের মধ্যে সুপার, হীরা, পান্না, ময়না জাত এ বছর ফলন দিয়েছে। বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। তিনি এ বছর ধানের দাম থাকায় আগামি বছর উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
themesba-lates1749691102