তানজিনুল ইসলাম। পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রাথমিক শাখায় শিক্ষকতা করেন। অর্থনীতি বিষয়ে মাস্টার্স পাশ করে তিনি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। শিক্ষকতায় মোটামুটি ভালই চলছিলো। কিন্তু বাঁধ সেজেছে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস। লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষক তানজিনুল ইসলাম এখন ‘টি-স্টোর’ খুলে কোন রকম পরিবারের হাল ধরেছেন।
গত দেড় বছর ধরে করোনা ভাইরাসে সারাবিশ্বের মতো দেশেও টানা লকডাউনে সব পেশার মানুষকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশের অর্থনীতি। এরইমধ্যে করোনাকালে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখিন শিক্ষকতা পেশা। এই মহৎ পেশার প্রতি শিক্ষিত যুব সমাজের চাহিদা থাকলেও করোনায় এ পেশার পরিবর্তন ঘটছে প্রতিদিন। বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। প্রায় একই রকম চিত্র দেখা গেছে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের। চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ প্রাথমিক শাখার বেশ ক’জন শিক্ষক নানা পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
তানজিনুল ইসলাম দেড় বছর পূর্বে শিক্ষকতা করলেও তিনি এখন চা ও নাস্তা উপকরণের দোকান খুলে ব্যবসা করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যেমন কর্মহারা শিক্ষকরা তেমনি দিশেহারা যুবকেরা। দেখা যাচ্ছে না কোন আশার আলো। আর্থিক সংকট ও পেটের ক্ষুধা তাদের তাড়া করছে প্রতিনিয়ত। এহেন পরিস্থিতিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও আর্থিক স্বচ্ছল বন্ধুদের সহযোগিতা নিয়ে গত মাসে ওয়াপদা রোড এলাকায় চারু ছায়া কমপ্লেক্সে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। বিক্রি করছেন সকল ধরনের চা, নাস্তা উপকরণ এবং দুগ্ধজাত শিশুখাদ্য।
জানতে চাইলে শিক্ষক তানজিনুল ইসলাম বলেন, করোনাকালীন সময়ে অধিকাংশ মানুষ কর্ম হারিয়েছে। চলছে সরকার ঘোষিত একের পর এক লকডাউন। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ছে বেকারত্ব। কিন্তু পেট তো পরিস্থিতি বুঝে না। আয় রোজগারের পথ বন্ধ থাকায় নিজের পরিবারকে বাঁচাতেই এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
কমেন্ট করুন