বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৪ অপরাহ্ন

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন : আরো কয়েক দিন থাকতে পারে গরম

সৈকত
  • আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১
  • ৩২১ বার পড়া হয়েছে

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের মানুষের জনজীবন। গরমের কারনে ঈদের ছুটিতেও অনেকে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা। অন্যদিকে গরমে নানা শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেকে। বিশেষ করে শিশুরা সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে জেলায় ৩৫.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম পড়েছে। তবে এক দিনের ব্যবধানে সেটা বেড়েছে .২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৮ মে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এই গরমের প্রভাব আরো কয়েক দিন ধাকতে পারে। তবে এর মধ্যে বৃষ্টির সম্ভবনাও আছে বলে জানান আবহাওয়া অফিস।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার দুলাল দাশ জানান, সারা দেশে এখন গরমের মৌসুমের কারনে পর্যটন নগরী কক্সবাজারেও কয়েক দিন ধরে গরম পড়ছে। ১৭ মে জেলায় ৩৫.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম পড়েছে। এর আগে ১৬ মে ৩৪.০ ডিগ্রি গরম পড়েছে। আর ১৮ মে গরম পড়েছে ৩৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনে প্রায় সময় একই ধরনের গরম পড়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তীব্র গরমের মধ্যেও যে কোন সময় বৃষ্টির সম্ভবনা আছে।

এদিকে তীব্র গরমের কারনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জেলা সর্বস্থরের সাধারণ মানুষ। ঈদের ছুটি থাকলেও অনেকে গরমের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে চায়নি বলে জানা গেছে।

এ ব্যপারে শিক্ষক আবদুর রহিম বলেন,লকডাউনের কারনে এমনিতেই কয়েক মাস ধরে সবাই ঘর বন্দি। তার উপর জেলা পর্যটন কেন্দ্রগুলোও বন্ধ। তাই দীর্ঘদিন ঘরে থাকা ছাড়া উপায় নাই।

তবুও ঈদের সময় চিন্তা করেছিলাম ছেলেমেয়ে নিয়ে একটু বের হবো। তবে কয়েক দিন যেভাবে গরম পড়ছে তাতে আর ঘর থেকে বের হওয়ার মনমানসিকতা পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাড়ির শিশুদের কথা চিন্তা করে আর বের হইনি। টেকপাড়া সমাজ কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক দিন ঘরে থাকতে থাকতে পরিবারের সবাই হাপিয়ে উঠেছিল। তাই আশা করেছিলাম ঈদের সময় একটু বের হবো। কিন্তু তীব্র গরমের কারনে সেই আশাও নিস্ফল হয়ে গেছে। এতে শিশুরা বেশ অস্থির হয়ে গেছে। পরে বিকাল বেলায় কিছুটা বের হয়েছি তাও বেশ গরম অনুভব হয়েছে। বিশেষ করে রাতে গরমের কারনে ঘুমাতে না পেরে বেশ সমস্যা হচ্ছে। এতে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেক ডাক্তার নার্স ছুটিতে। তার উপর হাসপাতালে রোগির সংখ্যা বেশি। মূলত তীব্র গরম পড়ার কারনে রোগি বাড়ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। অনেকে রোজার সময় অপুষ্টিজনিত খাবার খাওয়ার কারনে, আবার অনেকে শিশু ঈদের সময় গরমে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার কারনে বমি, পায়খানা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তিনি গরমের সময় সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আহবান জানান। একই সাথে দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব এখনো উর্ধমুখি থাকায় ঘর থেকে কম বের হওয়ার তাগাদা দেন।

এদিকে গরম নিয়ে পিএমখালী ইউপি সদস্য নুরুল হুদার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে গ্রাম এলাকায় বিভিন্ন গাছের ছায়া থাকতো। বাড়িঘরে রাতের বেলায় বেশ ভালভাবে ঘুমানো যেত এখন ঘনবসতির কারনে সেই পরিবেশ আর নেই। তার উপর পল্লী বিদ্যূতের অত্যাচারে টিকে থাকা মুশকিল।গরম যত বাড়ে লোডসশডিংও ততবাড়ে। তাই গরমে মানুষ খুবই কষ্টে আছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঈদগাঁও শাখার সভাপতি মনজুর আলম বলেন, গত ২ বছরের মধ্যে বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৭০ শতাংশ পাহাড় কাটা পড়েছে। একই সাথে গাছগাছালি বলতে কিছুই নেই। তার এখন গ্রামেও গরমের জালায় টিকে থাকা যাচ্ছেনা। কয়েক বছর আগেও তীব্র গরমেও আমাদের গ্রামে মোটামুটি মানুষ সহনীয়ভাবে বসাবাস করতে পারতো। এখন গরমের কারনে মানুষের টিকে থাকা মুশকিল হয়ে গেছে।

এদিকে গরমের কারনে রাস্তায় ভাড়া কমে গেছে এবং গাড়ী চালাতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানান রিক্সা, টমটম চালকরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
themesba-lates1749691102