বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৬ অপরাহ্ন

বাসযোগ্যতায় পিছিয়ে থাকা শহরের তালিকায় ঢাকা ‘চতুর্থ’

সৈকত
  • আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১
  • ২৮৮ বার পড়া হয়েছে

বাসযোগ্যতার বিচারে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) করা ১৪০টি শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান এবার ১৩৭তম। কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে বাসযোগ্যতায় এগিয়ে থাকা শহরগুলোর তালিকায় যেখানে ব্যাপক রদবদল হয়েছে, সেখানে এক বছরে ঢাকা এগিয়েছে এক ধাপ।

গতবছর ঢাকার অবস্থান ছিল এই তালিকার নিচের দিক থেকে তিন নম্বরে, এবার সেখান থেকে চার নম্বরে উঠে এসেছে চারশ বছরের পুরনো এ শহর।

কোন শহর কতটা বাসযোগ্য তা বোঝার জন্য স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামো- এই পাঁচ মানদণ্ডে বিচার করেছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। ১০০ ভিত্তিক সূচকে ঢাকার স্কোর এবার ৩৩ দশমিক ৫। ৯৬ স্কোর নিয়ে এবারের তালিকার শীর্ষে রয়েছে নিউ জিল্যান্ডের অকল্যান্ড। দুই ধাপ এগিয়ে দ্বিতীয় অবস্থান উঠে এসেছে জাপানের ওসাকা, স্কোর ৯৪.২। আর অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ৯৪ স্কোর করে গতবারের দশম অবস্থান থেকে এক লাফে উঠে এসেছে তালিকার তৃতীয় অবস্থানে।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এর আগে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে করা বাসযোগ্য শহরের তালিকার শীর্ষে ছিল ভিয়েনা। এবার শীর্ষ দশেও ঠাঁই হয়নি অম্ট্রিয়ার রাজধানীর, স্থান হয়েছে ১২ নম্বরে। তবে বাসযোগ্যতার বিচারে খারাপ দশার শহরগুলোর অবস্থানে হেরফের হয়নি বিশেষ।৩১.২ স্কোর নিয়ে নাইজেরিয়ার লাগোস তালিকার ১৩৯তম এবং ৩২.৫ স্কোরে পাপুয়া নিউ গিনির রাজধানী পোর্ট মোরসবি ১৩৮তম অবস্থানে আছে। এর পরেই রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। পাঁচ সূচকের মধ্যে ঢাকা সবচেয়ে কম ১৬.৭ স্কোর পেয়েছে স্বাস্থ্যখাতে, যা দামেস্ক আর পোর্ট মোরসবির সমান। তবে ক্যামেরুনের দুয়ালা আর জিম্বাবুয়েরে হারারের স্কোর এ খাতে আরও খারাপ, ১২.৫।

আর অবকাঠামোর বিচারে বাংলাদেশের ২৬.৮ এবং সংস্কৃতি ও পরিবেশে ৩০.৮ স্কোর তালিকার পুরো ১৪০ দেশের মধ্যেই সবচেয়ে কম। এছাড়া স্থিতিশীলতার বিচারে ঢাকাকে ৫৫ এবং শিক্ষায় ৩৩.৩ স্কোর দিয়েছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।

এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে চিকিৎসা খাতে দুর্বলতার কারণে গত এক বছরে তালিকার নিচের দিকে দেশগুলোর অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। “কোভিড-১৯ ঠেকাতে দরিদ্রতম এই শহরগুলো যদি টিকার ব্যবস্থা করতে না পারে, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে চিকিৎসা খাতে দুর্বলতার কারণে গত এক বছরে তালিকার নিচের দিকে দেশগুলোর অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। “কোভিড-১৯ ঠেকাতে দরিদ্রতম এই শহরগুলো যদি টিকার ব্যবস্থা করতে না পারে, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বড় ধরনের চাপ তৈরি করতে পারে, যেমনটা ভারতে হয়েছে।”

বাসযোগ্যতায় সবচেয়ে খারপ ১০টি দেশের তালিকায় এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে করাচির নামও এসেছে। তালিকায় ১৩৪ নম্বরে আছে এ শহরটি। মহামারীর কারণে ২০২০ সালে এ তালিকা করা সম্ভব হয়নি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পক্ষে। এবারের তালিকা করতে গিয়ে ভালো অবস্থানে থাকা শহরগুলোর তালিকায় বেশ কিছু নড়চড় চোখে পড়ছে। “মহামারীর আগের তুলনায় বিশ্বের শহরগুলোর বাসযোগ্যতা অনেক কমেছে এবং আমরা দেখছি ইউরোপের মত অঞ্চলেও খুবই কঠিন আঘাত লেগেছে।”

ভৌগলিকভাবে নিউজিল্যান্ডের বিচ্ছিন্ন অবস্থান এবং সীমান্ত এলাকায় লকডাউন দিয়ে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সফলতার কারণেই এবার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে অকল্যান্ড। এর আগে ২০১৭ সালের তালিকায় নিউ জিল্যান্ডের এই শহর ছিল অষ্টম অবস্থানে। এবার নিউ জিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটনও তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে উঠে এসেছে।

ইআইইউ বলছে, “নিউ জিল্যান্ডের কঠোর লকডাউনের ফলেই ফের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু করা গেছে এবং অকল্যান্ড ও ওয়লিংটনের মতো নগরীর মানুষ মহামারীর আগের মত জীবন উপভোগ করতে পারছেন।” আগামী বছরের তালিকায় আরও পরিবর্তনের আভাস দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “মহামারী কাটিয়ে উঠতে টিকা, পরীক্ষা, শনাক্ত করা এবং কোয়ারেন্টিনের সমন্বয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কতোটা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, সে অনুযায়ী হেরফের হবে তালিকায়।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
themesba-lates1749691102