মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) পরিবর্তন করে চোরাই মোবাইল ফোন বিক্রির অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত বৃহস্পতিবার ওই দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকার আদালত দুজনকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশকে অনুমতি দেন। এই দুজন হলেন—শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার নওপাড়া গ্রামের হযরত আলী (৪৯) ও মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী থানার আলদি বুড়িতলা গ্রামের ইকবাল হোসেন (১৯)।
পল্টন থানা-পুলিশ ঢাকার আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, চোরাই মোবাইল ফোন কেনার পর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করাই তাঁদের পেশা। আসামিরা সংঘবদ্ধ মোবাইল ফোন চোর চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই মোবাইল ফোন সংগ্রহ করেন। পরে সেসব মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর বদল করে বিক্রি করেন।
১৫ জুলাই রাজধানীর মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের প্রীতি ইলেকট্রনিকস দোকানের সামনে থেকে ৭০টি চোরাই মোবাইল ফোনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)–৩)। ওই ঘটনায় র্যাবের পরিদর্শক মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় র্যাব কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় সংঘবদ্ধ অপরাধীরা দীর্ঘদিন ধরে চোরাই মোবাইল সংগ্রহ করে আসছে। পরে ওই সব চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে থাকে। এসব চোরাই মোবাইল সংগ্রহ করে পেশাদার অপরাধীরা খুন, অপহরণ, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছে, যা জননিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি।’
র্যাবের পরিদর্শক মোশারফ হোসেন বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, গুলিস্তানে সংঘবদ্ধ চক্র চোরাই মোবাইল অল্প দামে সংগ্রহ করে আসছে। পরে মোবাইলের ফ্ল্যাশিং ডিভাইস সফটওয়্যারের মাধ্যমে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে তা বেশি টাকায় বিক্রি করে। পেশাদার অপরাধীরা আইএমইআই পরিবর্তিত মোবাইল ব্যবহার করে বড় অপরাধ করছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেন, মামলার প্রধান আসামি হযরত আলীর কাছ থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ৫২টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়। অপর আসামি ইকবালের কাছ থেকে পাওয়া যায় ১৮টি চোরাই মোবাইল ফোন। এসব মোবাইল ফোনের দাম প্রায় ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা।
মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই দুই আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখার জন্য আদালতে আবেদন করে পুলিশ। র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, দুই আসামির কাছ থেকে ওয়ালটন, সিম্ফনি, স্যামসাং, নকিয়া, মাইক্রোম্যাক্সসহ নানা ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা সব মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করেছে চক্রটি।
কমেন্ট করুন