মিয়ানমারে সা¤প্রতিক লড়াই সহিংসতায় দেশের ভেতরে উদ্বাস্তু হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। তারা পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে জঙ্গলে। জঙ্গলের কিছু শিবিরে আশ্রয় নিয়ে আছে অল্পসংখ্যক মানুষ। আবার কিছু শিবিরে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। প্লাস্টিক শিটের নিচে গাদাগাদি করে মাথা গুঁজে তারা বৃষ্টি-বাদল থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, সা¤প্রতিক সহিংসতার মধ্যে মিয়ানমারের কেবল কায়াহ রাজ্যেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১১০,০০০ মানুষ। সেইসঙ্গে মিয়ানমারের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে যে লড়াই চলছে তাতে সব মিলে গত ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষেরা বলছেন, তারা খাদ্য সংকটে আছেন। ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে রোগ। শিশুদের অনেকে ডাইরিয়ায় ভুগছে। পরিষ্কার পানির অভাব। অনেকে চাল কিংবা খাবার আনার সুযোগও পাচ্ছেন না।
মিয়ানমার জান্তা তাদের বিরোধীদেরকে সন্ত্রাসীর তকমা দিয়েছে। এর মধ্যে আছে নবগঠিত কারেন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের মতো জান্তা বিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস, যারা ওই অঞ্চলে গত মাস থেকে লড়াই করে আসছে। এ লড়াইয়ে সামরিক বাহিনীতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
বিভিন্ন স¤প্রদায়ের মানুষের কাছ থেকে আবেদন আসায় এই জান্তা বিরোধীরা মঙ্গলবার হামলা বন্ধ করবে বলে জানালেও, জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া অনেক মানুষই বাড়িঘরে ফিরে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
তুমুল লড়াইয়ের কেন্দ্র হয়ে ওঠা ডেমোসো শহরের কাছের একটি গ্রামের জান্তা বিরোধী এক আন্দোলনকর্মী বলেন, “যুদ্ধবিরতির সময় প্রত্যন্ত গ্রামগুলো থেকে কিছু মানুষ খাবার এবং জিনিসপত্র নিতে বাড়িতে ফিরে গেলেও তাদের বেশির ভাগই সেখানে থাকার সাহস পায়নি।” “বাড়িতে থাকার চাইতে জঙ্গলের ক্যাম্পে থাকাই নিরাপদ” বলেন তিনি। কারেন মানবাধিকার গোষ্ঠীর পরিচালক বানিয়া কুং অং বলেন, “জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই এখন জঙ্গলে বাস করছে। বিষয়টিকে আমলে না নিলে বহু মানুষের প্রাণহানি হতে পারে।”
কমেন্ট করুন