বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০১:০৭ অপরাহ্ন

সাগরে ৬ দিন লুঙ্গি ফুলিয়ে বেঁচে থাকা ইমরান দেশে ফিরেছে

Reporter Name
  • আপডেট করা হয়েছে শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ৫৫২ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক নিউজঃ

সাগরে টানা ছয়দিন লুঙ্গি ফুলিয়ে বেঁচে থাকা সেই ইমরান দেশে ফিরেছে। আইনি বেড়াজাল ও কূটনৈতিক যোগাযোগের পর ভারত থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে সে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে বেনাপোল সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর কাছে তাকে হস্তান্তর করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

পরে সেখান থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইমরানের বাবা ও স্বজনরা তাকে বেনাপোল থানার মাধ্যমে গ্রহণ করে। কিশোর ইমরান পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের শিক্ষার্থী ও মডেরখাল এলাকার মো. ইসমাইল খানের ছেলে।

১৪ বছরের কিশোর মো. ইমরান খান দৈনিক আমাদের সময়কে মুঠোফোনে বলেছে, ‘ছোটবেলায় পুকুরে লুঙ্গি ফুলিয়ে ডাম্বুরা বানিয়ে সাঁতার কাটার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ছয় দিন সাগরে ভেসে থাকি। ভাসতে ভাসতে এক পর্যায়ে ভারতের জলসীমায় প্রবেশ করি। সেখানকার জেলেরা আমাকে উদ্ধার করে পশ্চিমবঙ্গের রায়দিঘি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে রায়দিঘি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।’

‘সেখান থেকে ভোলাহাট থানার নূর আলী মেমোরিয়াল সোসাইটি নামে একটি শিশু যত্ন ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রে রাখা হয় আমাকে। দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত সেখানেই ছিলাম’ বলে জানায় ঝড়ের কবলে ট্রলার থেকে ছিটকে পড়া এই কিশোর।

গত বছরের ২৫ আগস্ট ইমরানের বাবা ইসমাইল খানের মালিকানাধীন এফবি ইমরান নামে ট্রলারটিতে ইমরানসহ ১২ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যায়। পরদিন ২৬ আগস্ট ভোররাতে সাগর থেকে মাছ শিকার করে ঘাটে ফিরে আসার পথে বলেশ্বর নদের মোহনায় হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি। এ সময় শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই ট্রলার থেকে সাগরে পড়ে যায় ইমরান।

সাগরে ছয় দিন লুঙ্গি ফুলিয়ে ভাসতে ভাসতে ৩১ আগস্ট ভারতীয় জলসীমা অতিক্রম করে ইমরান। ওই সময় দেশটির মাছ ধরা ট্রলার এফবি বাবা পঞ্চানন ট্রলারের চালক মনোরঞ্জন দাস তাকে উদ্ধার করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার রায়দিঘি থানায় পৌঁছে দেয়।

ইমরানের বাবা ইসমাইল খান দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, ‘অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে ছেলেকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে গত বছরের ৩১ আগস্ট রাতে পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম।’

এদিকে, ছেলেকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা আয়েশা বেগম। আল্লাহর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ছেলেকে পেয়ে খুশি। আমার ছেলেকে দেশে আনার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই।’

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, বরগুনার জেলা প্রশাসক, ট্রলার মালিক সমিতি, পাথরঘাটা প্রেসক্লাব ও স্থানীয় সাংবাদিকসহ তার স্বজনরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করেছেন।

এদিকে, জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ইমরানের বেঁচে থাকাকে অলৌকিক এবং দেশে ফেরায় দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের ভালোবাসা বলে অভিহিত করেন।

সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
themesba-lates1749691102